Wednesday 17 July 2019

দৌড়ময় জীবন

অনেক কাল আগের কথা। যখন, উনার সাথে দেখা করতে আসতাম কার্জনহল এলাকায়। দেখা-সাক্ষাৎ পর উনি বাসায় চলে যেতেন উনার ভার্সিটির বাসে, আর আমি আমার ক্যাম্পাসের বাস ধরতাম কার্জন হলের পাশ থেকেই (বঙ্গবাজার মোড়)।
লাস্ট মিনিট পর্যন্ত কথা বলতে গিয়ে দেখতাম বাস টা জাস্ট ছেড়ে দিচ্ছে বলে!
সেটা দেখে দ্রুত বিদায় নিয়ে, বাস ধরার জন্য দিতাম দৌড়।
বাসের স্পিড বাড়ে তো আমার স্পিড ও বাড়ে, কিন্তু এক সময় পরাস্ত হতাম। বাস বেশ খানিকটা  এগিয়ে যায় আমার থেকে। দৌড় থামিয়ে হাঁপাতে থাকি।
কিন্তু আবার আশা জাগায়। দেখলাম, সামনের জ্যামে বাসটা আটকে গেসে। ধরার জন্য আবার দিতাম দৌড়। কাছে চলে গিয়েছি, আর মাত্র ১০ হাত! কিন্তু আমাকে হতাশ করে বাস টা জ্যাম থেকে মুক্তি পেয়ে দেয় দৌড়। আমি ও পিছনে পিছনে দৌড়াই। বাস আমায় রেখে চলে যায়। আবার ও হতাশ হলাম। আমি আশা ছেড়ে, ক্লান্ত ও ঘর্মাক্ত হয়ে হাঁপাতে থাকি। যাহোক, চোখ মেলে দেখি বেশ খানিকটা দূরে গিয়ে বাসটা আবার ও জ্যামে আটকে গিয়েছে। এবার আমি শরীরের সর্ব শক্তি দিয়ে দিলাম দৌড়। এবার স্পিড দিলাম আগের থেকে ও বাড়িয়ে। এবার সফল হলাম। সামনের জ্যাম ছুটতে ছুটতে আমি আমার ক্যাম্পাসে র বাসটা ধরে ফেললাম।
প্রশ্ন আসবে, এবার আমি হয়ত লাকি ছিলাম, কারণ সামনের জ্যাম টা হয়ত বেশিক্ষন ছিল।
কিন্তু, এটাও মানতে হবে, আমি যদি আগের মতই দৌড়াতাম/ কিংবা আশা ছেড়ে দিয়ে বলতাম থাক, তাহলে কিন্তু ধরতে পারতাম না কোন মতেই।
যাহোক, আজকে জ্যামে র মধ্যে বসে, দেখলাম এক ছেলে আমার মত করেই জাবির বাসের পিছনে ছুটছে, তখনই নিজের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। তবে এটা থেকে আমি দুইটা শিক্ষা নিয়েছি-

১) কোন কিছুই শেষ মিনিটের জন্য রাখা ঠিক না, সময় করে শেষ ঘন্টার আগেই কাজ কমপ্লিট করতে হবে।
২) হতাশ হতে নেই, আশা ছাড়তে নেই, দম থাকা পর্যন্ত শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে হবে, সফলতা আসবেই ইনশা আল্লাহ।

No comments:

Post a Comment